স্বাগত কলাম
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বাংলাদেশ উত্তপ্ত
হয়ে আছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী, হিংসা-হানাহানি এবং
সর্বত্র সীমালঙ্ঘনের এক কুৎসিত প্রতিযোগিতা চলছে সবুজ বাংলার মঞ্চে। হরতালের পর হরতাল
এবং সরকার ও বিরোধীদলের অব্যাহত সংঘাতে আমরা শংকিত এবং বিপর্যস্ত। এরসাথে যোগ হয়েছে
কিছু খোদাদ্রোহী তরুণের বিকৃত মানসিকতা এবং ধর্ম নিয়ে তাদের ঠাট্টা-তামাশা। এর প্রতিবাদে
মাঠে নেমেছেন সারাদেশের ঈমানদার এবং নবীপ্রেমিক মুসলমানরা।
গতমাসের ৬ তারিখ রাজধানী
ঢাকার মতিঝিলস্থ শাপলা চত্বরের জনসমুদ্র থেকে এক নতুন গর্জন শুনেছে বাংলাদেশ। শত বাধা-বিপত্তি
এবং প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে সেদিন ঢাকার রাজপথে নেমে এসেছিল প্রতিবাদী মানুষের বাঁধভাঙা
জোয়ার। আমরা আশা করবো, ক্ষমতাসীন সরকার
এবং ঐসব তরুণ ব্লগাররা এ সমাবেশের দাবী এবং আবেগকে অনুধাবন করেছেন। এ দেশ ও সমাজে থাকতে
হলে আল্লাহ ও তার রাসূল সা. এবং একইসাথে সব ধর্ম সম্পর্কে শ্রদ্ধা ও সম্মানের দৃষ্টিভঙ্গি
নিয়ে বাস করতে হবে। বাকস্বাধীনতার নামে মানুষের আবেগ এবং ভালোবাসার স্পর্শকাতর ইস্যুগুলো
নিয়ে গালিগালাজের জায়গা এ দেশ নয়- এটুকু শিক্ষা তারা পেয়েছেন বলে আমরা আশাবাদী।
বাংলাদেশের
রাজনীতি ক্রমেই বিষাক্ত হয়ে উঠছে। স্বার্থপরতা এবং সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির কালৈা থাবায়
আহত হচ্ছে এ দেশের সামগ্রিক উন্নতি এবং অগ্রগতি। অথচ যে মেধা এবং অফরন্ত সম্ভাবনা নিয়ে
এ দেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল- দেশে সুনিয়ন্ত্রিত রাজনৈতিক পরিবেশে এর সঠিক পরিচর্যা
হলে আমরা এতোদিনে অনেক অনেক দূর এগিয়ে যেতাম। অথচ বিপুল জনসংখ্যার এমন মূল্যবান শক্তি
এবং অসংখ্য অগণন কৃতি সন্তান নিয়েও আমরা পিছিয়ে আছি, মুসলিম বিশ্বের ২য় বৃহত্তম দেশ হয়েও আমরা দূর্নীতি এবং অন্যান্য লজ্জাকর অপরাধের
তালিকায় শীর্ষস্থান ধরে রাখছি- জাতি হিসেবে এ যেমন লজ্জার, মুসলমান হিসেবে তেমনিভাবে তা পরাজয় এবং বেদনার।
চারিদিকে
এমন পরাজয় এবং বেদনা নিয়েও আমরা এগিয়ে চলেছি। এ বাংলাদেশ একদিন জেগে উঠবে সব অন্যায়
ও অপশক্তির বিরুদ্ধে, অসহায় মানুষগুলোর
মুখে একদিন প্রাপ্তি ও সাফল্যের হাসি ফুটবে- এ আশা ও স্বপ্ন নিয়েই আমরা বেঁচে আছি।
পরম শক্তিমান দয়ালু রব নিশ্চয়ই একদিন এ অভাগা জাতির দিকে তার সামান্যতম দয়া ও করুণার
দৃষ্টিতে তাকাবেন। সে আশায় আমাদের এ সুদীর্ঘ প্রতিক্ষা।