Skip to main content

সমালোচনা


বিষ্ময়বোধের চাবুকে সুন্দর মুখচ্ছবি

মীর হেলাল


জানুয়ারি ২০১৩ নবধ্বনির প্রকাশ শোকসংখ্যায়। 
মুফতি আমিনীর বিয়োগব্যথায় এ আয়োজন।  যদিও এমন উৎসর্গনামা নবধ্বনি আগে করেনি। এর ব্যাখ্যায় স্বাগত কলামে উলে¬খ দুটি কারণের। ১. নবধ্বনির সংশি¬ষ্ট সবাই মরহুমের স্নেহধন্য ছাত্র; ২. তাঁর অসাধারণ গুণাবলির সমাবেশ। এমন কারণ নিঃসন্দেহে রঙিন ফানুসের মতন।  
আমি যতোদূর জানি, নবধ্বনি কাণ্ডারীরা মুক্তমন ও সৃজনের মানুষ। তারা হঠাৎ সংকীর্ণগলিতে হাঁটবেন সেটা প্রচণ্ডরকম ঝাঁকুনি দেয় পাঠকমনকে। কারণ, সাহিত্য-সংস্কৃতি কখনোই স্বজনপোষণের নয়। বরং উন্মুক্ত বৈভবে প্রতিমান। সত্য ও সুন্দরের উত্তরাধিকার।

নবধ্বনির জানুয়ারী সংখ্যায় স্মৃতিচারণমূলক ১৮টি গদ্য ও নিবন্ধ স্থান পেয়েছে। ইয়াহইয়া ইউসুফ নদভীর রচনাশৈলীতে প্রতিভার ছাপ আছে। লেখার নির্বাচন-সচেতনতায় প্রশংসার দাবিদার সম্পাদক। রিপ্রিন্ট লেখায় কিছুটা অসহায় নবধ্বনি। লিখেছেন পরমপুরুষ উবায়দুর রহমান খান নদভী ও শরীফ মুহাম্মদ। শোকসংখ্যায় শোভাবর্ধন করেছে সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীরের লেখা। সখ্যতার মানসভূমিতে আলোড়ন তোলেন সীমাহীন। যখন লেখেনÑআমার যদি কোনোদিন শক্তি-সাহস হয়, যদি তাঁর অকুতোভয় অন্তরের এক চিলতে জমিন আমার বুকে চর হয়ে কোনোদিন জেগে ওঠে, সেদিন আমি কলমের চেয়ে আমার কণ্ঠকেই বানাবো প্রতিশোধ গ্রহণের হিরন্ময় হাতিয়ার। যদি তাঁর গর্জন কোনোদিন আমার বুকের ভেতরে স্ফুলিঙ্গ হয়ে জ্বলে ওঠে সেদিন আমি কাগজের বুকে কালো অক্ষরের চাবুক ফেলে রাজপথের কালো পিচে নেমে আসবো।... সত্যি অসাধারণ।
তামীম রায়হানের তিনি নেই! লেখায় এসে থামতেই হবে কিছুক্ষণ। গল্প বলার ঢঙে নিবন্ধটি শুরু হলেও বুকজুড়ে অসীম শূন্যতার খেলা। মুফতি আমিনীর অফিসঘরÑসব আছে আগের মতন, শুধু তিনি নেই। নেই আদর্শ কারিগরের ব্যক্তিত্বের ঝংকার।
নবধ্বনির সূচিবদ্ধ অধিকাংশ লেখা অগঠনমূলক এবং স্খলিত ভাবনার সন্নিবেশ। তারুণ্যের এ কাগজ শুরু থেকেই নতুন দিনের শে¬াগান দিয়ে এসেছে। রাজহাঁস গলায় বলেছেÑ তরুণরাই নবধ্বনির প্রাণ, বড়ো লেখক। কিন্তু সেই স্বাতন্ত্র্য থাকলো কই যখন বয়স্ক লেখকদের ভিড়ে তারুণ্যের জলাঞ্জলি? একজন প্রবীন সংগ্রামী নেতাকে নিয়ে নবধ্বনির এ আবেগ আমাদেরকে অবাক করেছে।

মুফতি আমিনীর বৈচিত্র্যময় জীবনের লেখালেখি প্রসঙ্গ আড়াল করেছে নবধ্বনি। অথচ সাহিত্য-সংস্কৃতির কাগজে কোনো ব্যক্তির আলোচনায় প্রধানতম অনুষঙ্গ এটি। যদিও স্বাগত কলামে বাহুল্যকথনÑপাশাপাশি পাঠকরাও জানতে পারবেন তাঁর জীবন-যাপনের অজানা অনেক বিষয় এবং প্রচারের আড়ালে তাঁর ভিন্ন পরিচয়
অসংখ্য জায়গায় বানানপ্রমাদ। তাড়াহুড়ো নাকি এজন্য দায়ী! বানান ভুলের নবধ্বনি তখন পাঠকের সামনে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়। নবধ্বনি দ্বিতীয় জন্মের আগ পর্যন্ত তার রুচি এবং সৌন্দর্য ছিলো অতুলনীয়। ভালোবাসার কাগজের আলিঙ্গনে সিক্ত ছিলো লেখিয়েরা। না সেই হৃদ্যতা এখন আর নেই। বুকের উষ্ণতাও নেই। মহারথীদের ব্যস্ততার প্রাচীরে নবধ্বনি নীরব কান্না করে শুধু। দেখি লুকোচুরির প্রকাশ। সম্পাদকীয় বিশেস ব্যবস্থায় বিশ্বময় ঘুরে বেড়ানোয় সুখ নেই তার। মন ভালো নেই পাঠকেরও।
নবধ্বনি আবারও আড়মোড়া দিয়ে উঠুক। জন্ম হোক তৃতীয়ের। আলোর শিখায় প্রদীপ্ত হোক সবাই। পেশীতে চাই দৃঢ় প্রত্যয়ের এনার্জি। ভালোবাসার দাবি আপাতত এটাই কামনা করে। প্রয়োজনে একজন বন্ধু এগিয়ে আসুক তারুণ্যের নকীব হয়ে। হঠাৎ লণ্ঠন জ্বলে; হঠাৎ লণ্ঠন নিভে যায়।/গাছের গুঁড়ির কাছে নিঃশব্দ পোকার মিছিল নড়ে ওঠে। সেই মিছিল উদ্দীপ্তের গান করুক। লেখক-পাঠকের অটুট বন্ধন এবং ভালোবাসা প্রসারিত হোক নতুন দিনের পদধ্বনি শে¬াগানে। জয়তু নবধ্বনি।
  

সম্পাদক, ছোটোকাগজ কাশফুল

Popular posts from this blog

মার্চ ২০১৪

বিশ্বসেরা আদর্শ বালক মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ নিত্য দিনরাতের হয় আনাগোনা। বনের সুরভি ফুলে মুখরিত হয় চিত্ত আল্পনা। আঁধার লুকোয় , আলোর আগমন ঘটে। ফুল ফোটে। নদী উদ্বেলিত হয় প্রবহমান স্রোতে ; হৃদয় আকৃষ্ট হয় তার মনোমুগ্ধকর কলকল প্রতিধ্বনিতে। পাখি গান করে। পর্বত চিরে ঝরনা ঝরে। চিত্রক প্রকৃতির চিত্র আঁকে। কবি রচনা করে কবিতা Ñ এ সবই হলো পৃথিবীর নিয়মিত বিধান। আর এ বিধান থেকেই আমরা প্রতিনিয়ত নানাভাবে শিখছি। তাইতো অবলীলায় কবির ভাষায় বলতে পারি , ‘ পৃথিবীটা হলো শিক্ষাঙ্গন ’ । শিক্ষার এ ধারায়ই কোনো মহামনীষীর উত্তম আদর্শ অনুসরণ করে মানুষ হতে পারে আদর্শবান , আপন জীবন গড়তে পারে উজ্জ্বলময় এক অতুলনীয় জীবনে , বাল্যে হতে পারে একজন সেরাদশ আদর্শ বালক , আর নৈতিকতায় এক গরিষ্ঠ নৈতিক , কর্মজীবনে পদার্পণ করে হতে পারে সমাজের যোগ্যনেতা এবং শিষ্টাচারে আদর্শ শিষ্টাচারক।

মুফতী আমিনী রহ. স্মরণ সংখ্যা-২০১৩

মুফতি আমিনী- ভাঙা ভাঙা স্বরে সোনা ঝরানো কথা আর শুনবো না! - ইয়াহইয়া ইউসুফ নদভী এক. মুফতি ফজলুল হক আমিনী। এখন রাহমাতুল্লাহি আলাইহি। বুঝি নি , এতো তাড়াতাড়ি .. এতো অসময়ে .. এতো দুঃসময়ে হঠাৎ করে তিনি চলে যাবেন! সেদিন রাতে এতোটা ‘ ঘুম-কাতুরে ’ না হলেও পারতাম! গভীর রাতে অনেক ফোন এসেছে , ধরতে পারি নি! সময় মতো তাঁর মৃত্যু সংবাদটা জানতে পারি নি! ফজরে উঠে দেখি ; অনেক মিসকল। সাথে একটা ‘ মোবাইলবার্তা ’ Ñ ‘ মুফতি আমিনী আর নেই ’ ! ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন!! শোক-বিহ্বলতায় আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম! শোকস্তব্ধ এতিমের মতো হাহাকার করতে লাগলো ‘ এতিম ’ মনটা! তাঁকে এভাবে হঠাৎ করে হারানোর শোক অনেক বড় শোক! কেননা , এ শোক প্রিয় উস্তায হারানোর শোক!

ইন্তেকাল

চলে গেলেন নিভৃতচারী আধ্যাত্মিক মনীষী   মুহাদ্দিস আল্লামা   নুরুল ইসলাম জদীদ (রহ.) হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর একে একে আমাদের মুরব্বীগণ বিদায় নিয়ে যাচ্ছেন। গত পাঁচ-ছয় বছরে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন জাতির অকৃত্রিম অভিভাবক ,   জাতীয় খতিব মাওলানা ওবাইদুল হক রহ. ,   খতিব মাওলানা আমিনুল ইসলাম (রহ.) ,   সাবেক এমপি মাওলানা আতাউর রহমান খান ,   মুফতিয়ে আযম মাওলানা আহমদুল হক (রহ.) ,   পীরে কামিল মাওলানা জমির উদ্দিন নানুপুরী (রহ.) ,   কুতুবে যামান মাওলানা মুফতি আজিজুল হক (রহ.) এর সুযোগ্য খলিফা মাওলানা নুরুল ইসলাম (কদিম সাহেব হুজুর) (রহ.) ,   প্রখ্যাত মুহাদ্দিস মাওলানা শাহ মুহাম্মদ আইয়ুব (রহ.) ,   শায়খুল হাদীছ মাওলানা আজিজুল হক (রহ.) এর মতো বরেণ্য ওলামা-মশায়েখ।