Skip to main content

খবর

যেভাবে গ্রেফতার হন মাহমুদুর রহমান



১৩ মিনিটেই দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে পুলিশ-র্যাব ও ডিবি পুলিশ সদস্যরা গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এছাড়াও মাহমুদুর রহমানের অফিস তল্লাশি করে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট, কম্পিটারের সিপিইউ ও মনিটর এবং আটটি সিডি নিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার সকাল আটটা ৫৫ মিনিটে তাকে আমার দেশ পত্রিকা অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নেয়া হয়।
আমার দেশ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মাহবুবুর রহমান নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, সকাল পৌনে আটটার দিকে কয়েকশ পুলিশ-র্যা ব ও সাদা পোশাকধারী ৩০ থেকে ৪০ জন পুলিশ সদস্য দুই লিফটে আমার দেশ কার্যালয়ে নামেন। দারোয়ানকে মারধর ও উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ভেতরে প্রবেশ করেন। ক্যামেরা ফটোসাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নেন এবং সিসি ক্যামেরা খুলে নিয়ে যান।

পুলিশ সদস্যরা সরাসরি মাহমুদুর রহমানের রুমে ঢোকেন। তখন তিনি নাশতা করছিলেন। পুলিশ তাকে বলে, আপনাকে নিয়ে যেতে এসেছি। তখন মাহমুদুর রহমান তাদের বলেন, আমাকে একটু সময় দিন দুই রাকাত নামাজ পড়ব। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে একজন পুলিশ সদস্য তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। একপর্যায় বন্দুক তাক করেন। তখন মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি আপনাদের সঙ্গে যাব। কেন এ ধরনের ব্যবহার করছেন! কি করবেন? গুলি করবেন, করেন। শেষ পর্যন্ত তাকে নামাজ পড়ার সময় দেয়া হয়নি।
মাহবুব বলেন, মাহমুদুর রহমান আবার পুলিশকে অনুরোধ করে বলেন, আমাকে দুটো বই এবং কোরআন শরিফটা নিতে দেন। এ সময় পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আপনি পাক পবিত্র আছেন? মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি পাক পবিত্র আছি। তখন তাকে একটি ছোট কোরআন শরিফ সঙ্গে নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। তখন তিনি কোরআন শরিফ ও দুটি বই সঙ্গে নিয়ে নেন।
এর আগে সম্পাদক মাহমুদুর রহমান পাজামা পরতে চাইলে তা দেয়া হয়নি। জুতা পরতে চাইলেও পারেননি, স্যান্ডেল পরেই তাকে পুলিশের সঙ্গে গাড়িতে উঠতে হয়েছে।
মাহবুব সাংবাদিকদের বলেন, মাহমুদুর রহমান একান্ত আলাপে আমাদের বলেছেন, আমার কাছে সংবাদ এসেছে, আমাকে গুম ও হত্যার চেষ্টা চলছে। গাড়িতে তোলার সময় আমাদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা সত্যের পথে এগিয়ে যাও।
মাহবুব বলেন, আমি পুলিশ কর্মকর্তার কাছে জানতে চেয়েছি কেন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, উপরের নির্দেশেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
আমার দেশের সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করার বিষয়ে জানতে জাইলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ক্ষমতা থাকলে সবই করা যায়।  
সিকিউরিটি সুপারভাইজার আবদুর রহমান নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, পুলিশ এলে আমি তাদের বসতে বলি। কিন্তু তারা তা না শুনে আমাকে মারধর করে।


মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে যতো মামলা



বিচারপতির স্কাইপি সংলাপ প্রকাশের ঘটনায় রাষ্ট্রদ্রোহ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার হন দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
এর আগেও তিনি ২০১০ সালে ১ জুন একই পত্রিকার প্রকাশক হাসমত আলীর দায়ের করা মামলায় তিনি গ্রেফতার হন। এরপর একে একে তার নামে সারা দেশের আদালতে ও ঢাকার থানাগুলোতে ৫৬টি মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে তার মামলার সংখ্য ৬২টি।মামলাগুলোর মধ্যে পাঁচটি মামলায় সে সময় তিনি ১৪ দিন রিমান্ডও খেটেছিলেন। মাহমুদুর রহমানের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বাংলনিউজে জানিয়েছেন, মাহমুদুর রহমানের নামে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেও পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলোর মধ্যে ৪টি শাহবাগ থানায় ও একটি রমনা থানায়।তিনি আরও বলেন, ৫২টি মামলার মধ্যে সারা দেশে বর্তমানে ২১টি মামলা চলমান আছে। হাসমত আলীর দায়ের করা মামলাটি তিনি প্রত্যাহার করেছেন এবং ৪০টি মামলা হাইকোর্টে স্থগিত আছে।এর আগে ২০১০ সালের ১ জুন গ্রেফতার হন মাহমুদুর রহমান। ওইদিন দৈনিক আমারদেশ পত্রিকার বৈধ প্রকাশক না থাকার অভিযোগে পত্রিকাটির ডিক্লেয়ারেশনও বাতিল করা হয়। এরপর রাতভর নানা নাটকীয়তার পর দৈনিক আমার দেশ অফিস থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।দীর্ঘ ৯ মাস ১৭ দিন কারাভোগের পর ২০১১ সালের ১৭ মার্চ তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। এর মধ্যে আদালত অবমাননার অভিযোগে আপিল বিভাগ তাকে ছয় মাসের সাজা দিলে ২০১০ সালের ১৮ আগস্ট থেকে ২০১১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত তিনি সাজা ভোগ করেছিলেন।মাহমুদুর রহমানের আরেক আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন বেলাল বাংলানিউজকে বলেন, মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে চলমান ২১টি মামলার মধ্যে ১৫টি মামলায় তিনি জামিনে আছেন। সর্বশেষ বিচারপতির স্কাইপি সংলাপের মামলায় ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের উস্কানিমূলক সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দায়ের করা মামলায় তিনি জামিনে নেই।এসব মামলায় তিনি হাইকোর্টে জামিন নিতে গিয়ে ব্যর্থ হন। এরপর থেকেই গ্রেফতার আতঙ্কে ছিলেন মাহমুদুর রহমান।এ প্রেক্ষিতে গত ৬ এপ্রিল লংমার্চ-উত্তর মতিঝিলের জনসভায় হেফাজতে ইসলাম মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও প্রকাশক হাসমত আলীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেন আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান।তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৫৬ ও ৫৭ ধারায় ও দণ্ডবিধির ১২৪, ১২৪-এ, ৫০৫এ, ১২০বি ও ৫১১ ধারায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়।মামলাটি সরাসরি এজাহার হিসাবে গ্রহণ করতে ওইদিন ম্যাজিস্ট্রেট তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছিলেন।রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ১৩ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলা দায়ের করা মঞ্জুরি প্রদান করেন।সম্প্রতি দৈনিক আমার দেশে স্কাইপির মাধ্যমে প্রবাসী এক আইন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারপতি নিজামুল হকের কথিত কথোপকথনের উপর সংবাদ প্রকাশিত হয়।মামলায় উল্লেখ করা হয়, আমার দেশ প্রায়ই আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যাবলি সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করে এই বিচার কার্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালিয়ে আসছে।তারই ধারাবাহিকতায় পত্রিকাটি গত ৯ ডিসেম্বর প্রথম পৃষ্ঠায় গভর্নমেন্ট গেছে পাগল হইয়া, তারা একটা রায় চায়, ১০ ডিসেম্বর ড. কামাল ক্রিমিনাল বুঝে না, আমিরউল গ্যাঞ্জাম করে, ওয়ালিউর চোর, ১১ ডিসেম্বর সাহারাকে সরিয়ে দেয়াটা গুড নিউজ ১২ ডিসেম্বর মালুম ভাই হায়দার আলীরে স্ট্রংলি সন্দেহ করতেছে, ১৩ ডিসেম্বর শাহিনুর সাহেব ঠাস কইরা আমার পায়ে পইড়া গেল, শিরোনামে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করে।পত্রিকাটিতে প্রকাশিত এসব ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ফলে দেশে ও বিদেশে জনমনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সর্ম্পকে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়েছে।এ নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের মুখে গত ১১ ডিসেম্বর পদত্যাগপত্র জমা দেন বিচারপতি নিজামুল হক। ১৭ ডিসেম্বর উক্ত বিচারপতির স্কাইপি কথোপকথনের ভিত্তিতে কোনো ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।


 সূত্র- বাংলানিউজ, নতুন বার্তা



Popular posts from this blog

মার্চ ২০১৪

বিশ্বসেরা আদর্শ বালক মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ নিত্য দিনরাতের হয় আনাগোনা। বনের সুরভি ফুলে মুখরিত হয় চিত্ত আল্পনা। আঁধার লুকোয় , আলোর আগমন ঘটে। ফুল ফোটে। নদী উদ্বেলিত হয় প্রবহমান স্রোতে ; হৃদয় আকৃষ্ট হয় তার মনোমুগ্ধকর কলকল প্রতিধ্বনিতে। পাখি গান করে। পর্বত চিরে ঝরনা ঝরে। চিত্রক প্রকৃতির চিত্র আঁকে। কবি রচনা করে কবিতা Ñ এ সবই হলো পৃথিবীর নিয়মিত বিধান। আর এ বিধান থেকেই আমরা প্রতিনিয়ত নানাভাবে শিখছি। তাইতো অবলীলায় কবির ভাষায় বলতে পারি , ‘ পৃথিবীটা হলো শিক্ষাঙ্গন ’ । শিক্ষার এ ধারায়ই কোনো মহামনীষীর উত্তম আদর্শ অনুসরণ করে মানুষ হতে পারে আদর্শবান , আপন জীবন গড়তে পারে উজ্জ্বলময় এক অতুলনীয় জীবনে , বাল্যে হতে পারে একজন সেরাদশ আদর্শ বালক , আর নৈতিকতায় এক গরিষ্ঠ নৈতিক , কর্মজীবনে পদার্পণ করে হতে পারে সমাজের যোগ্যনেতা এবং শিষ্টাচারে আদর্শ শিষ্টাচারক।

মুফতী আমিনী রহ. স্মরণ সংখ্যা-২০১৩

মুফতি আমিনী- ভাঙা ভাঙা স্বরে সোনা ঝরানো কথা আর শুনবো না! - ইয়াহইয়া ইউসুফ নদভী এক. মুফতি ফজলুল হক আমিনী। এখন রাহমাতুল্লাহি আলাইহি। বুঝি নি , এতো তাড়াতাড়ি .. এতো অসময়ে .. এতো দুঃসময়ে হঠাৎ করে তিনি চলে যাবেন! সেদিন রাতে এতোটা ‘ ঘুম-কাতুরে ’ না হলেও পারতাম! গভীর রাতে অনেক ফোন এসেছে , ধরতে পারি নি! সময় মতো তাঁর মৃত্যু সংবাদটা জানতে পারি নি! ফজরে উঠে দেখি ; অনেক মিসকল। সাথে একটা ‘ মোবাইলবার্তা ’ Ñ ‘ মুফতি আমিনী আর নেই ’ ! ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন!! শোক-বিহ্বলতায় আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম! শোকস্তব্ধ এতিমের মতো হাহাকার করতে লাগলো ‘ এতিম ’ মনটা! তাঁকে এভাবে হঠাৎ করে হারানোর শোক অনেক বড় শোক! কেননা , এ শোক প্রিয় উস্তায হারানোর শোক!

ইন্তেকাল

চলে গেলেন নিভৃতচারী আধ্যাত্মিক মনীষী   মুহাদ্দিস আল্লামা   নুরুল ইসলাম জদীদ (রহ.) হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর একে একে আমাদের মুরব্বীগণ বিদায় নিয়ে যাচ্ছেন। গত পাঁচ-ছয় বছরে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন জাতির অকৃত্রিম অভিভাবক ,   জাতীয় খতিব মাওলানা ওবাইদুল হক রহ. ,   খতিব মাওলানা আমিনুল ইসলাম (রহ.) ,   সাবেক এমপি মাওলানা আতাউর রহমান খান ,   মুফতিয়ে আযম মাওলানা আহমদুল হক (রহ.) ,   পীরে কামিল মাওলানা জমির উদ্দিন নানুপুরী (রহ.) ,   কুতুবে যামান মাওলানা মুফতি আজিজুল হক (রহ.) এর সুযোগ্য খলিফা মাওলানা নুরুল ইসলাম (কদিম সাহেব হুজুর) (রহ.) ,   প্রখ্যাত মুহাদ্দিস মাওলানা শাহ মুহাম্মদ আইয়ুব (রহ.) ,   শায়খুল হাদীছ মাওলানা আজিজুল হক (রহ.) এর মতো বরেণ্য ওলামা-মশায়েখ।