মুফতী আমিনী (রহ.)ঃ এক জীবন্ত ইতিহাস
মুফতী ফয়জুল্লাহ
তিনি চলে
গেলেন। গেছেন না ফেরার দেশে। তিনি হাসতে হাসতে গেলেন। কাঁদলো জগৎবাসী। অঝোর ধারায় কেঁদে
উঠলো আকাশ। সেদিন আকাশ এভাবে কেঁদে উঠবে এর পূর্বাভাস ছিল না। কিন্তু কাঁদলো, কাঁদলো একই
সাথে বাংলাদেশের উপরে ছাদ হয়ে থাকা পুরো আকাশ। কাঁদলো অজস্র মানুষ। কারও গাল বেয়ে পড়ছে
অশ্র“। কারও বুকফাটা আর্তনাদ। কেউ ডুকরে কেঁদে উঠছে। কেউ কেঁদে চলেছে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে।
সারা দেশ যেন শোকে কাতর। আপনহারা শোকের বেদনায় যেন সারা দেশের মানুষ অন্যরকম এক কাতরতায়
মুহ্যমান। একটি রূহের তিরোধানে অকস্মাৎ শূন্য হয়ে গেল অনেকগুলো আসন। কারণ, তিনি ছিলেন
একাধারে একজন খ্যাতিমান হক্কানী আলেম, ছিলেন শায়খুল হাদীস। ছিলেন দেশবিখ্যাত মুফতী। ছিলেন একজন আপাদমস্তক আবেদ। ছিলেন
মুত্তাকী। ছিলেন নির্লোভ। ছিলেন মুস্তাজাবুদ দাওয়াত। ছিলেন রুহবানুল লাইল-ফুরসানুন নাহার। ছিলেন লেখক। ছিলেন সময়ের শ্রেষ্ঠ
বক্তা। ছিলেন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন বিচক্ষণ রাজনীতিক।
ছিলেন ঐতিহাসিক। ছিলেন কিতাবের পোকা।
ইলমের
অথৈ সমুদ্রে সদা সাঁতাররত বিমগ্ন সাধক। ছিলেন অভিভাবক। ছিলেন তাৎক্ষণিক সঠিক সিদ্ধান্ত
নেওয়ার মত অসাধারণ ক্ষমতার অধিকারী। ছিলেন সৎসাহসী। ছিলেন প্রচ- আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন।
ছিলেন ইসলামের জন্য নিবেদিত প্রাণ। হাক্কানী উলামায়ে কিরামের আওয়াজ। ছিলেন বুযুর্গানে
দ্বীনের মুখপাত্র। ছিলেন আসলাফ ও আকাবিরের উজ্জল নমুনা। ছিলেন বিস্ময়কর প্রতিভা ও ধী
শক্তির অধিকারী। অসাধারণ বাগ্মিতায় তিনি ছিলেন অদ্বিতীয়। তিনি অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন।
ছিলেন তিনি অনন্য অসাধারণ বহুগুণে গুনান্বিত
শত বছরের ব্যবধানে নজীর বিহীন একজন মনিষী।
সবাইকে কাঁদিয়ে
তিনি চলে গেলেন রফীকে আ’লার সান্নিধ্যে। তিনিই তো ছিলেন মজলুমের কণ্ঠস্বর, জালিম ও তাগুতের
চির দুশমন। এমন গর্বময় প্রস্থানের মাধ্যমে জালিম সরকারের শিকল থেকে তিনি চিরমুক্তি
লাভ করেছেন। কিন্তু জাতিকে রেখে গেলেন অথৈ সাগরে ভাসমান। উহ...যখন তাকে সবচেয়ে বেশী
প্রয়োজন, তখন তিনি চলে গেলেন। জগৎবাসী আর শুনবে না বাঘের গর্জন। তাগুত ও আল্লাহ দুশমনদের
জন্য ভিত কাঁপানো হুংকার আর শুনবে না আল্লাহবিশ্বাসী মানুষ। তাঁর সাহসী সিদ্ধান্ত মুসলমান
আর জানতে পারবে না। বুক ফুলিয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার মত সাহসী সঠিক সুপুরুষ মানুষ
আর দেখবে না।
তিনি চিরস্থায়ী
জান্নাতের বাসিন্দা হোন,
এ আমাদের ব্যাকুল হৃদয়ের চিরপ্রার্থনা। যার ইন্তেকালে আল্লাহতে
বিশ্বাসীদের হৃদয় ভেংগে গেছে। সব দিকে শুধু শূন্যতার হাতছানি। কেমন যেন অন্ধকার হয়ে
আসছে অনাগত দিনগুলো। যিনি অন্যের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য নিজে কষ্ট সয়েছেন। যিনি সবার
শান্তির জন্য সব আপদ-মুসিবত নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। যিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন
কওম ও মিল্লাতের সেবায়। যিনি ফুল হয়ে প্রতিটি দ্বীনের বাগানে সুভাস ছড়িয়েছেন। অন্ধকার
রাতে যিনি চাঁদ হয়ে আলো ছড়িয়েছেন। যিনি সুর্যের মত অন্ধকার দূর করে হকের রশ্মি জ্বালিয়েছেন।
যিনি তাঁর যৌবন লুটিয়েছেন আল্লাহর রাস্তায়। যিনি আল্লাহর প্রতিটি আদেশের সামনে মাথা
নুয়েছেন একাগ্রচিত্তে। যিনি সুভাস হয়ে মুমিনের হৃদয়ে স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন। যিনি
ছিলেন মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর ইহসান, অনুগ্রহ।। তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই।
তিনি চলে
গেছেন মুহুর্তের মধ্যে। তাঁর স্নেহ ভালোবাসা আর শাসনে আমাদের খেদমত করেছেন। যখন আমরা
তাঁর খেদমত করার যোগ্য হলাম তখন তিনি পাড়ি জমালেন অন্য জগতে। তিনি ফুলও ছিলেন, তরবারীও ছিলেন।
তিনি বাস্তবেই বাতিল ও তাগুতের সাইক্লোন, টর্নেডো, সুনামি সিডরকে
থামিয়ে দিতেন মুহূর্তে।
তাগুতের বিরুদ্ধে
তার উচ্চারণ ছিলো তরবারীর চেয়েও ধারালো। তিনি স্পষ্ট ভাষায় সাদাকে সাদা, কালোকে কালো
বলতে পারতেন। তিনি অত্যাচারী শাসকের সামনে হক্ব কথা নির্দ্বিধায় বলতে পারতেন। উদ্বুদ্ধ
করতেন দেশ জাতিকে। বলতেন হকের কথা। তিনি ছিলেন বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব। ভালোবাসা ও স্নেহের
সুর ছিলেন, বিদ্্েরাহের মিনার ছিলেন, কখনও তিনি শুধুই ফুল ছিলেন, কখনও তিনি ছিলেন ধাউ ধাউ করে জ্বলে
উঠা দাবানল, তিনি দরিদ্রকে বলতেন এই দিন পরিবর্তন হবে। তিনি অত্যাচারী স্বেচ্ছাচারী শাসকদের
বলতেন, তোমাদের মাথায় ক্ষমতার যে মুকুট আছে কদর না করলে সেটি পদদলিত হয়ে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে
যাবে। তিনি আল্লাহদ্রোহীদের চক্রান্ত ষড়যন্ত্রকে বলতেনÑ‘আমি তোমাদের থামাতে পারি।’ তিনি দুঃখ-কষ্ট, বেদনা আর কারাগারকে বলতেন- ‘আমি তোমাদের ভাঙ্গতে জানি।’ তিনি আরাম, শান্তি, আনন্দ আর নিদ্রাকে বলতেন, ‘আমি তোমাদেরকে ছাড়তে পারি।’ তিনি নিজের
জীবনকে বলতেন ‘আমি তোমাকে আল্লাহর রঙে রঙীন করতে পারি।’ (যা তিনি করেছেনও)। তিনি মানুষকে বলতেন, মানুষকে ভালোবাসো।’ নিজেও ভালোবাসতেন
উদার হৃদয়ে। তিনি নেই আজ এই ধরায়।
তিনি চলে
গেছেন আল্লাহর আশ্রয়ে। দিনে বাতিলের বিরুদ্ধে বাঘের মত হুংকার, রাতের বেলা
অবুঝ শিশুর মত করে মহান রবের দরবারে বুকফাটা কান্না আজ থেমে গেছে। ঘুমিয়ে থাকা জাতিকে
ঝাঁকুনি দিয়ে জাগ্রত করে পিচঢালা রাজপথে তিনি আর নামবেন না। শহীদী রক্তের বাঁধনে সাদা
কাফন পড়ে কুরআন হিফাজতের জন্য কুরআন হাতে নিয়ে তিনি আর মারমুখী পুলিশের মুখোমুখী হবেন
না। আল্লাহর প্রতি অটুট আস্থা ও অবিচল বিশ্বাস এবং আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের বড়ত্বের কথা
তাঁকে আর বলতে শোনা যাবে না। তাঁর উপস্থিতি আমাদের মধ্যে যে সাহস যোগাতো সেই সাহস যোগানোর
মানুষটি আর আসবে না। তাঁর কাঁধে সব দায়িত্ব তুলে দিয়ে নিজেরা নিরাপদ ও নিশ্চিত থাকার
দিন শেষ হয়ে গেলো।
তিনি চলে
গেছেন। যিনি সব সুখ ত্যাগ করে-‘জীবন্ত হায়াত’ শহীদী মৃত্যু
লাভ করেছেন। পুলিশ বেষ্টনীতেই হলো তাঁর আল্লাহর সান্নিধ্যে যাওয়া। তাঁর দুআ আল্লাহ
কবুল করেছেন। তিনি বলতেন,
আল্লাহর জন্য পাগল হয়ে দেখো- সুন্দর ও সৌন্দর্য কাকে বলে? বাস্তবিক
পক্ষে তিনি সেই সুন্দর ও সৌন্দর্যকে অনুভব করেছিলেন। তিনি বলতেন, গর্দানে আঘাত
খেয়ে দেখো- তবে তুমি গোলাপ হয়ে সুবাস ছড়াবে। তিনি আঘাত পেয়েছেন। ‘আজ সুবাস ছড়াচ্ছেন। তিনি কথায় নয়- কাজে মুজাহিদ ছিলেন। তিনি তাগুত প্রতিরোধের প্রধান
বীরসেনানী ছিলেন। তিনি সত্য, দ্বীন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষে হিমালয় পাহাড়ের মতো মজবুত ছিলেন।
তিনি ছিলেন মিথ্যা আর অসুন্দরের ভিতকাঁপানো বীর। তুলে ধরতেন সত্যের পতাকা। তিনি পাহাড়সম
বিপদ আপদ ও সংঘাতে আপোষহীন থাকতেন। এগিয়ে যেতেন ওমর রা. আলী রা. এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে।
তিনি এগিয়ে যেতেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে।
আজ স্মৃতির
পাতায় আমার মনটা বিচরণ করছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের পক্ষের আপোষহীন এই মজলুম মানুষটি
আজ আমাদের মাঝে নেই। তিনি চলে গেছেন। তার পর
থেকে এই বুকের ভিতর আমার প্রাণটা খুবই কষ্টে আছে। আমরা সহ্য করতে পারছি না সেই কষ্ট।
সেই সীমাহীন কষ্টের তীব্রতায় আমার কিছুই ভালো লােেগ না। সেই কষ্ট আমার হাড়, মাংস, মজ্জায়, রক্তের কণায়
কণায় মিশে গেছে। এই জীবনটা দুর্বিষহ লাগছে। স্থির একটা শ্বাসও নিতে পারি না। মনে হয়
দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। মনে হয় বুকের ভিতর আগুনের লেলিহান শিখা কেউ চাপিয়ে দিচ্ছে।
যেখানে মন-প্রাণ পুড়ছে। অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করছে।
তিনি চলে
গেছেন। আর ফিরে আসবেন না। তিনি নিজের নযির নিজেই স্থাপন করে গেছেন। অনেক কঠিন সময় মুকাবিলা
করেছেন। কঠিন মুহূর্ত পার করেছেন। বাতিল ও তাগুত সব শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তো তাঁর উপর।
তিনিও সত্য ও হকের পতাকা হাতে পৌঁছে যেতেন পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে। তিনিই সেই কঠিন
সময়ে শক্ত কদমে, সুদৃঢ় থেকে পরিবর্তনের পথ দেখাতেন। তিনি চলে গেলেন।
তিনি চলে
গেছেন। সাড়া দিলেন মাওলার ডাকে। কিন্তু কিভাবে? ২০০৭ সালে ব্রেইন ষ্ট্রোক করেছিলেন।
তারপর থেকে তাঁকে নিয়মিত ডাক্তার এর তত্ত্বাবধানে থাকতে হতো। কিন্তু বিগত ২১ মাস! এই
২১ মাস তিনি গৃহবন্দী ছিলেন। তাঁকে বাইরের কোন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হতো
না। শুধু তাই নয়- তাঁকে পূর্ব নির্ধারিত তারিখে ডাক্তারের কাছেও যেতে দেওয়া হতো না।
যেতে চাইলে বলা হতো- আজ নয়,
কাল। কাল আসলে বলা হতো- পরশু। এভাবে তাঁকে চিকিৎসা নেয়া থেকে
পদে পদে বাধার সৃষ্টি করা হতো। ইন্তেকালের ৫ দিন আগেও একই ঘটনার পুনারাবৃত্তি করা হলো।
তাঁকে পূর্ব নির্ধারিত সময়েও ডাক্তার এর কাছে যেতে দেওয়া হয়নি। এখন এই প্রশ্ন উঠা কি
অস্বাভাবিক যে, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা
করা হয়েছে? মুমুর্ষ অবস্থায়ও তাঁকে সরকারী বিভিন্ন বাহিনী কেন অনুসরণ করবে? তিনি যখন
পরপারের যাত্রী তখনও কেন গেইটে সশস্ত্র পুলিশ পাহারা? কেন পুলিশ
বেষ্টনী তাঁর চারপাশে?
এ কেমন নির্মমতা? এ কেমন নির্যাতন? এ কেমন অমানবিকতা? নিষ্ঠুরতা? এর বিচার
কি হবে না? এর জবাব কে দিবে?
১১/১২/১২ইং
তিনি রুটিন অনুযায়ী লালবাগ জামেয়ায় এলেন। ইসলামী আইন বিভাগ (ইফতা বিভাগের) ছাত্রদের
ক্লাস করালেন। বাদ আসর সহকর্মীদের সাথে কথা বললেন। নির্দেশনা দিলেন। বাদ মাগরিব তিনি
বুখারী শরীফ এর দরস দিলেন। বাদ এশা একজনের জানাযায় ইমামতি করলেন। ঐ ব্যক্তির অসিয়ত
ছিলো- মুফতী আমিনী সাহেব যেন তাঁর জানাযা পড়ান। তার শেষ ইচ্ছা পূর্ণ করলেন।
সামনে পিছনে
পুলিশ বেষ্টনী। স্বয়ং তাঁর গাড়ীতে একজন পুলিশ। বাসায় গেলেন। খাওয়া দাওয়া করলেন। ফ্রেশ
হলেন। বললেন, আমার শরীরটা খারাপ লাগছে। মনে হয় গ্যাস জমেছে পেটে। পরিবারের পক্ষ থেকে ডাক্তার
এর সাথে যোগাযোগ করা হলো। মেডিসিন নিলেন। উত্তর দিকে মাথা পশ্চিম দিকে মুখ করে শুয়ে
পড়লেন। বললেন, আমার নিশ্বাসটা যেন বন্ধ হয়ে আসছে। বুকে হাত দিলেন। উচ্চারণ করলেন সর্বশেষ শব্দ
“আল্লাহ”। আস্তে করে চোখ বন্ধ হয়ে এল। ১২/১২/১২ রাত ১২ টা ২০ মিনিটে ডাক্তার এর পক্ষ থেকে
ঘোষিত হলো- মুফতী আমিনী আর নেই। তিনি অন্তরীণ অবস্থায় পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যে ‘শহীদী মৃত্যু’ লাভ করলেন।
যে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করেছেন ইমাম আবু হানীফা রহ. ইমাম মালেক রহ. ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. ইবনে তাইমিয়াহসহ
অনেকে। তিনি মৃত নন,
তিনি চিরঞ্জীব।
তিনি চলে
গেলেন। রেখে গেলেন নজীর বিহীন দৃষ্টান্ত। তিনি এত দিন, এতটা মাস, দিনের পর
দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ সয়েছেন বিভীষিকাময় কঠোর জুলুম। যার সামান্য আমাদের উপর হলে
ভেংগে যেতো আমাদের শির দাঁড়া। কিন্তু তিনি দাঁতে দাঁত চেপে সব অত্যাচার সব চাপ ও কঠোরতা
সয়েছেন। তিনি নিষ্পাপ ফুল। তাঁকে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা কিছুই করতে
পারিনি। তিনি ‘সিরাতুল মুস্তাকীম’ বেছে নিয়েছেন।
বেনিয়াদের দালাল ও ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়া কভারেজ দেয়নি। কিন্তু তাঁর জানাযায় লক্ষ লক্ষ
মানুষের নজিরবিহীন উপস্থিতি শাসকের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছে। দাপা-দাপি শুরু হয়েছে। হয়তো
আরও ৪/৫ ঘণ্টা দেরিতে জানাজা হলে সারা বাংলাদেশ ঢাকামুখী হয়ে যেতো কিনা?
আমরা জানি, ঝড়টা আসবেই।
ঝড় আসবে তাগুত ও বাতিলের বিষ দাঁত ভেংগে দিতে। তাঁর জানাযা এরই পূর্বাভাস মাত্র। মুফতী
আমিনী একজন চলে গেছেন। তিনি নেই। কিন্তু আজ একজন মুফতী আমিনী একজন দুজন বা কজন মুফতী
আমিনী নয়। গোটা বাংলাদেশ আজ মুফতী আমিনী হয়ে উঠছে। তারা মিশে আছে মানুষের ভিড়ে, মাটির সাথে, আলো আর বাতাসের
সাথে। সেই আমিনীরা অসহ্য যন্ত্রণা বুকে নিয়ে, কোমরে পাথর বেঁধে কঠিন এই পথটা পাঢ়ি
দেবেই। চূড়ান্ত সীমা দূরে হলেও খুব বেশী দূরে নয়। মুফতী আমিনীর দেখানো পথে এগিয়ে যেতে
হবে আমাকে/আমাদেরকে। আল্লাহ যেন আমাদের কবুল করেন। মুফতী আমিনী রহ. হোক আসীন জান্নাতুল
ফেরদাউসের উঁচু স্থানে। আমীন!